বইয়ের খবর
মেলায় দ্বিতীয় দিনে নতুন ৩১টি বই
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/02/03/book_fair_new_book.jpg)
অমর একুশে বইমেলার গতকাল শুক্রবার ছিল ২য় দিন। আর এদিন বইমেলায় নতুন বই এসেছে ৩১টি। এর মধ্যে রচনাবলী এসেছে একটি, প্রবন্ধ এসেছে তিনটি, ইতিহাস সম্পর্কিত বই এসেছে একটি, জীবনী গ্রন্থ এসেছে দুইটি, উপন্যাস এসেছে ১০টি, শিশুতোষ গল্প এসেছে একটি, কবিতার বই এসেছে আটটি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই এসেছে একটি, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই এসেছে একটি, ইতিহাস-ঐতিহ্য বিষয়ক একটি, মহাকাশ বিষয়ক বই এসেছে একটি এবং গল্পের বই এসেছে একটি।
বাংলা একাডেমির জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : মহাকবি আলাওল শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইমন জাকারিয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মিল্টন বিশ্বাস এবং মোহাম্মদ শেখ সাদী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মো. আবুল কাসেম।
প্রাবন্ধিক বলেন, বাঙালি ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের অবাঙালি গবেষকদের বিচারে খ্রিষ্টীয় সপ্তদশ শতকের কবি আলাওল মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আখ্যান কবি হিসেবে স্বীকৃত। আলাওল রচিত পদ্মাবতী, সিকান্দরনামা, তোহ্ফা, রাগতালনামা ও পদাবলী এবং কাজী দৌলতের সতী-ময়না লোর-চন্দ্রাণী’র শেষাংশ হস্তলিখিত পাণ্ডুলিপির সাহায্যে সম্পাদিত গ্রন্থাকারে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন নতুন তথ্যের আলোকে মহাকবি আলাওলকে যে তত্ত্বীয় পরিসরে গবেষকগণ উপস্থাপন করছেন তাতে তাঁর সাহিত্যের গভীরতা, দূরদৃষ্টি-সম্পন্নতা এবং মহাকাল স্পর্শের ক্ষমতা স্পষ্ট হয়।
আলোচকবৃন্দ বলেন, মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টিকর্ম ‘সয়ফুলমুলুক-বদিউজ্জামাল’। এই কাব্যের পরিচয় কেবল আখ্যানকাব্য বা প্রণয়োপাখ্যানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এই কাহিনি কিচ্ছা আকারে যাত্রাপালায়ও পরিবেশিত হয়েছে। কাজেই এই পুথির আবেদন অত্যন্ত ব্যাপক ও বিস্তৃত। মহাকবি আলাওল তাঁর ভাষার সৌকর্য এবং পাণ্ডিত্যের কারণে মধ্যযুগের অন্যান্য কবিদের থেকে স্বকীয়। প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় সাহিত্যকর্মের পাঠোদ্ধার, সম্পাদনা বা আধুনিক বাংলা ভাষার অনুবাদ অত্যন্ত শ্রমসাধ্য কাজ। এ ধরনের সাহিত্য পাঠোদ্ধার করতে হলে হস্তলিখিত মূল পাণ্ডুলিপি বা পুথির ওপরই নির্ভর করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মো. আবুল কাসেম বলেন, মধ্যযুগে প্রচলিত বিশ্বাস ছিল যে বাংলা ভাষা মুসলমানের ভাষা নয়, হিন্দুর ভাষা। তথাপি মধ্যযুগের মুসলমান কবিগণ বাংলা ভাষায় প্রচুর সাহিতকর্ম রচনা করেছেন। মহাকবি আলাওলও এর ব্যতিক্রম নন। প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় সাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্মের একাধিক পাঠ থেকে লেখকের অভিপ্রেত পাঠটি পুনরদ্ধার করাই পাণ্ডলিপি বা পুথি সম্পাদনার মূল উদ্দেশ্য। এই কষ্ঠসাধ্য কাজে তরুণ গবেষকদের উৎসাহিত করতে হলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাচীন ও দুষ্প্রাপ্য পুথি এবং পাণ্ডলিপি সহজলভ্য করতে হবে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি রুবী রহমান, আসাদ মান্নান এবং মাহবুব সাদিক। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী লায়লা আফরোজ, মুস্তাফা ওয়ালিদ এবং মজুমদার বিপ্লব। এ ছাড়া ছিল ড. আবুল কালাম আজাদের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদ’ এবং ড. মো. শাহাদাৎ হোসেনের পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ’-এর পরিবেশনা।
সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী তিমির নন্দী, মহিউজ্জামান চৌধুরী, প্রিয়াংকা গোপ, জুলি শারমিলি এবং মানিক রহমান। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন গৌতম মজুমদার (তবলা), এ কে আজাদ মিন্টু (কী-বোর্ড), মো. ফারুক (অক্টোপ্যাড) এবং রিচার্ড কিশোর (গীটার)।
আজ শনিবারের সময়সূচি ও কার্যক্রম
আজ শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে বইমেলার ৩য় দিন। আজ মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিশতজন্মবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : মাইকেল মধুসূদন দত্ত শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন রফিকউল্লাহ খান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন খসরু পারভেজ এবং হোসনে আরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মুহম্মদ নূরুল হুদা।