বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট, বাড়িতে মায়ের আহাজারি
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/05/09/manikganj_pic.jpg)
বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদের বাড়ি মানিকগঞ্জে। তাঁর পরিবারে চলছে শোকের মাতম। আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
জেলা শহরের পৌরভূমি অফিসের সামনের গোল্ডেন টাওয়ারের সাত তলায় অসীমের মা নিলুফা আক্তার খানমের গগন বিদারী আর্তনাদে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিলুফা আক্তার বিলাপ করছেন আর বলছেন, ‘আমার ছেলে প্রতিদিন সকালে ফোন করে। কিন্তু আজ এখন পর্যন্ত ফোন করেনি। কখন আসবে অসীমের ফোন!’ তাঁর এই আহাজারি কোনোভাবে সামাল দিতে পারছেন না স্কুল শিক্ষিকা বোন পারভীনসহ স্বজনরা।
মা আহাজারি করে আরও বলছেন, ‘আমি আছি অথচ আমার ছেলে নাই—এটা কেমন কথা! আমারে মাটি দিব আমার ছেলে আর এখন আমাকে দিতে হইব তাকে মাটি!’
একমাত্র সন্তান ছিলেন অসীম জাওয়াদ। বাবা ডাক্তার আমানুল্লাহ নবীনগর এলাকায় একটি বেসরকারি কারখানায় কর্মরত। পরিবারের একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে শোকে কাতর তাঁর মা।
জাওয়াদের খালাতো ভাই রাজিব হোসেন জানান, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স একাডেমিতে (বাফা) যোগদান করেন অসীম জাওয়াদ। তিনি ২০১১ সালে বিমান বাহিনীতে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন।
রাজিব আরও জানান, অসীমের ছয় বছরের এক মেয়ে ও ছয়মাস বয়সী এক ছেলে রয়েছে। স্ত্রী রিফাত অন্তরাসহ চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় থাকতেন।
আজ দুপুর সাড় ১২টার দিকে পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) অসীম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বিমান বাহিনীর বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানের পাইলট ও কোপাইলট প্যারাসুট দিয়ে নেমে এলে তাঁদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অসীম জাওয়াদ মারা যান।
এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিমান বাহিনীর ওয়াইএকে১৩০ নামক যুদ্ধবিমানটি উড্ডয়নকালে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এ সময় বিমানটির পেছন দিকে আগুন লেগে যায় এবং চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের অদূরে কর্ণফুলী নদীতে আছড়ে পড়ে।
নিহত জাওয়াদের বড় মামা সাংবাদিক সুরুয খান জানান, অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন অসীম। স্কুল ও কলেজজীবনে সব সময় প্রথম হয়েছেন। ছোট বেলা থেকে তাঁর স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। আগামীকাল শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে অসীমের মরদেহ মানিকগঞ্জে আনা হবে। এরপর মানিকগঞ্জের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে জানাজা শেষে জুম্মার নামাজের পর শহরের শেওতা কবরস্থানে দাফন করা হবে।